সোমবার, ৩০ মে, ২০১১

নোবেল পুরস্কার ( পর্ব-০১ )

রচনা - কামরুল আলম


নোবেল পুরস্কারের ইতিহাস
সুইডেনের বিজ্ঞানি আলফ্রেড নোবেল ডিনামাইট সহ বিভিন্ন বিস্ফোরকের আবিস্কারক। পুরো নাম আলফ্রেড বারনাড নোবেল ।
nobel-1
তিনি ১৮৩৩ সালের ২১ অক্টোবর সুইডেনের স্টকহোমে জন্মগ্রহন করেন। পড়াশুনা করেন রসায়ন নিয়ে।
আগে পুরনো ভবন ভাঙ্গার জন্য প্রচুর স্রমিক লাগতো । যা ছিল খুব বেয়বহুল । এ ব্যয় কমানোর জন্য নোবেল আবিস্কার করলেন ডিনামাইট ।
d-4
খুব ই কার্যকর এ ডিনামাইট মুহূর্তের মধ্যে ভবন ধংস করতে পারত ।
d-3 
নোবেল ডিনামাইট আবিস্কার করলেন ভালো কাজের জন্য। কিন্তু মানুষ এটা ব্যবহার করতে লাগলো অন্য মানুষকে মারার জন্নে। যা দেখে নোবেল খুব ই আহত হয়েছিলেন। তার নিজের আবিস্কারে মানুষের অকাতর মৃত্যু দেখে স্তব্দ হয়ে গিয়াছিলেন। কিন্তু তখন আর তার কিছুই করার ছিল না । তিনি প্রচুর পরিমান ডিনামাইট বিক্রি করে অনেক টাকা কামিয়ে ছিলেন । তাই চিন্তা করলেন নিজের আয় বিলিয়ে দিবেন এবং তা দিবেন সুদুমাত্র বিজ্ঞানের উন্নয়নের জন্যে । আর তখন থেকে চালু করলেন নোবেল পুরস্কার , যা আজকের পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় পুরষ্কার ।




১=২ হলে কেমন হয়?

রচনা - কামরুল আলম


গনিতে অনেক মজা । আর ও মজা হয় যদি সেটা অদ্ভুদ হয় । আচ্ছা, কখন কি শুনেছেন এক সমান দুই হয় । বাস্তবে এক সমান দুই হলে গনিতের সব পাল্টে যাবে ।
1=2.1
নিচের অংক টি একটু দেখুন ।
প্রথমে ধরা যাক , ক=খ , তো গনিতের সুত্র অনুযায়ী , লেখা যায়
ক২-খ২=ক২-খ.খ [খ২=খ.খ ]
বা, ক২-খ২=ক২-ক.খ [ যেহেতু ক=খ ]
বা, ( ক+ খ )( ক-খ) = ক ( ক-খ) [ যেহেতু a2-b2= (a+b)(a-b) ]
বা, ক+ খ = ক
বা, ক+ ক = ক
বা, ২ক=ক
বা, ২=১
তো প্রমান হয়ে গেল যে ২=১ । তারমানে ২ টাকা = ১ টাকা । ১০০০ টাকা = ২০০০ টাকা ।
1
যদি এরকম হত তাহলে গনিত টিকত না । নিশ্চয়ই কোথাও ভুল আছে । তো ভুলটা কোথায় ?
VUL

ভুলটা দেখিয়ে দিচ্ছি । কোন সংখ্যাকে শূন্য দিয়ে ভাগ করলে ভাগফল অসীম হয় । আবার কোন সংখ্যাকে শূন্য দিয়ে গুন করলে গুনফল শূন্য হয় ।
4
তিন নম্বর লাইনে ক-খ=০ হয় কারন প্রথমেই বলা হয়েছে যে ক=খ ।
তো এই হল গনিতের মজা । কাউকে এরকম অংক দিয়ে দয়াকরে বোকা বানাবেন না । কারন এই অংকের কোন ভিত্তি নাই । পোস্তটি ভালো লাগলে বলবেন ।
সংগ্রহঃ
১। ইন্টারনেট ।



বাসায় বসে সাবান প্রস্তুত করুন

রচনা - কামরুল আলম


রসায়ন অবশ্যই মজার বিষয়। আর সে মজাটাকে উপভোগ্য করার জন্য এখন আপনাদের শিখিয়ে দেয়া হবে, কিভাবে বাসায় সাবান প্রস্তুত করতে পারবেন।
s-3
যা যা লাগবেঃ
১. ৫০ মিঃ লিঃ নারিকেল তেল ( প্যারাসুট নারিকেল তেলের ৫০ মিলির প্লাস্টিক বোতল পাওয়া যায় ) ,
coconut oil-1
২. ৫০ গ্রাম সোডিয়াম হাইড্রক্সাড NaOH ( এতো কঠিন নাম মনে রাখার দরকার নাই, দোকানে গিয়ে কস্তিক সোডা বললেই দিয়ে দিবে )
৩. লবন।
কি করতে হবেঃ
১. ছোট একটি করাই (পাতিল) নিন।
২. তাতে তেল ঢেলে দিন ।
BEA-2
৩. একটু গরম করুন ( ১ মিনিট হলে হবে )
৪. সাবধানে তেলের সাথে কস্তিক সোডা মেশান ।
৫. কিছুক্ষন গরম করুন।
৬. যখন দেখবেন করাই এ সাদা সাদা শক্ত বস্তু ( সাবান ) দেখা যাচ্ছে তখন করাই নামিয়ে ফেলুন।
s-4
৭. এবার পাত্রে হাল্কা পরিমান লবন দিন ( গ্লিসারিন থেকে সাবান আলাদা করার জন্নে লবন দিতে হবে, লবন না দিলে ও হবে – এ লাইন টুকু না বুজলে ও চলবে )
৮. সাবান রোঁদে শুকিয়ে নিন।
৯. সাবানের নির্দিষ্ট আকার দিন।
s-5
ব্যাস , প্রস্তুত হয়ে গেল সাবান। বাসায় প্রস্তুত করা এ সাবান অধিক ক্ষার যুক্ত , তাই ব্যবহার করার সময় সাবধান থাকুন ।
সতরকতাঃ
১. করাই এ কস্তিক সোডা ঢালার সময় সাবধান থাকতে হবে ।
c-2
২. এ সাবান অধিক ক্ষার যুক্ত , তাই বাচ্চাদের হাতে দিবেন না ।
পোস্তটি পসন্দ হলে বলবেন । পরবর্তীতে আরও অনেক কিছু প্রস্তুত করা নিয়ে লেখার ইচ্চে আছে । তবে অবশ্যই এমন কিছু যার উপকরন দোকানে কিনতে পাওয়া যাবে ।

রবিবার, ২৯ মে, ২০১১

আমেরিকার ভিসা

রচনা - কামরুল আলম


অনেকের ই সপ্ন থাকে আমেরিকা যাওয়ার বা আমেরিকার ভিসা পাওয়ার। ডিভি লটারি ছাড়া আর কি কোন উপায় এ আমেরিকা ভিসা পাওয়া যায় না? যায়...

রোবট আমেরিকান
রোবট আমেরিকান


আমরা জানি , কয়েক ভাবে যেকোনো দেশের নাগরিক হওয়া যায়। তো আমেরিকার নাগরিক হতে হলে কি করতে হবে ? উত্তর, আমেরিকায় জন্ম গ্রহন করতে হবে। কিন্তু সেটা ত আর এই জীবনে সম্ভব নয়। তাহলে.........
u-3

আপাতত নিজের দেশটাকে ভালবাসুন। তারপর দেশি একটা মেয়েকে বিয়ে করে ফেলুন। তারপর আপনার সন্তান হওয়ার সময় আমেরিকার কোন হাসপাতাল এ আপনার স্ত্রী কে ভর্তি করিএ দিন । আপনার সন্তান সেই দেশে জন্ম নিলে , সে জন্ম সুত্রে আমেরিকার নাগরিক হবে।
u-4
আর আমেরিকার একজন নাগরিক এর ভালো মন্দের দায় দায়িত্ত সে দেশের সরকারের । তো এই মরমে একখানা আবেদন করুন সরকারের কাছে। বউ সহ ভিসা পেয়ে যাবেন । আমার মামা থাকছেন এই ভাবে ।
v-1
বর্তমানে আমেরিকার সরকার বাবস্থাতি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন । তবে এখন ও এ আইন বিদ্যমান । তাই দেরি কেন ??


সাবান ব্যবহার নিয়ে কিছু কথা

রচনা - কামরুল আলম


যেহেতু আমি রসায়নবিদ , তাই রসায়ন নিয়ে কিছু লেখা উচিত। কিন্তু ব্যাপার কি জানেন, রসায়ন নিয়ে কিছু লিখতে ইচ্চে করে না। রসায়ন খুব কাথকত্থা বিষয় । সবাই বলে। আসলে কি তাই???
না, তা নয়। রসায়ন অতি মজার বিষয়। যখন আপনি একটির সাথে অন্য কোন কিছু মেশাবেন আর তখন যদি নতুন কিছু তৈরি হয় , তাহলে ত বুজতেই পারছেন। বাস্তবে সবসময় এটা হয় না। যাই হোক এখানে আমি আপনাদের অন্য কিছু শেখাব। আর তা হল , কিভাবে বুজবেন যে কোন সাবান ভালো??? 


সাবান
সাবান




সাধারনত আমরা জানি , দামি সাবান খুব ভালো, তাই না ??? বাস্তব কথা কি জানেন, দামি সাবান বাবহারে তেমন জীবাণু দূর হয় না। এখানে দেখুন দামি সাবান ব্যাবহারের পর ও জীবাণুদের দেখা যাচ্ছে।


জিবানুর আস্তানা
জিবানুর আস্তানা


তাহলে জীবাণু দূর করতে আমরা কি করতে পারি?? বুজিয়ে বলছি । আসলে জীবাণু দূর করতে সাবানের ভুমিকা কি ? মুলত জীবাণু দূর করে সাবানের ক্ষার । যে সাবানে ক্ষার যত বেশি , সে সাবান তত ভালো।
default-5
                                                                                                       সুগন্দি সাবান

আপনি কি টয়লেট এ সুগন্দি সাবান ব্যবহার করেন ?যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ হয় , তাহলে আপনি সুরক্ষিত নন  ; তাই আজ এখনি আপনার টয়লেট এর সাবানটি পালটে ফেলুন। টয়লেট এ ব্যবহার করুন অধিক ক্ষার যুক্ত কাপর কাচা সাবান ।
 default
পোস্তটি আপনার কাজে লাগলে বলবেন ।




পৃথিবির মোট তথ্য ২৯৫ এক্সাবাইট

রচনা - কামরুল আলম



কিছুদিন আগের একটি গবেষণায় জানা গেছে যে পৃথিবির মোট তথ্য ২৯৫ এক্সাবাইট। (১  এক্সাবাইট=১ বিলিয়ন গিগাবাইট) । ইউনিভার্সিটি অফ সাউদান কেলিফরনিয়ার গবেষকরা এ তথ্য  জানিয়েছেন। তাদের প্রাপ্ত ফলাফল নিয়া আলচনা করে দেখা গেছে যে, এ বিপুল পরিমান তথ্য নিয়া বই প্রকাশ করা হলে , সেই বই দিয়া পুরো চীনকে ১৩ স্তরে ডেকে দেওয়া যাবে।
বই এর স্তর
বই এর স্তর


 

চীন মানে ত বুজতে পারছেন। এত পরিমান বই রাখার মত লাইব্রারি কে বানাতে পারবে? হ্যাঁ, ইন্টারনেট ই সেই লাইব্রেরি । যার ধারন ক্ষমতার শেষ নেই । অদ্ভুদ কথা কি জানেন, এসব তথ্য দিয়া যদি অপ্তিকাল ডিস্ক বানান হয় তাহলে কি হবে?? হ্যাঁ, সেই ডিস্ক গুলা সাজালে তা চাদের উচ্চতাকে ছাড়িয়া যাবে।
অসঙ্ক অপ্টিকাল ডিস্ক
অসঙ্ক অপ্টিকাল ডিস্ক


 

তারপরেও আর ও বাস্তব কথা হল প্রতিদিন এসব তথ্য জামিতিক হারে বাড়ছে । হয়ত কিসুদিন পরে শুনতে পাবেন তা দিগুন হয়ে গেছে। আর এ সকল  তথ্যের জন্য কার  ও অবদান একার নয়। সকল মানুসের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ই এটি অম্ভব হয়েছে।

শনিবার, ২৮ মে, ২০১১

সৌরশক্তি চালিত প্লেনের প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট

রচনা - কামরুল আলম

শক্তির অফুরন্ত উৎস সূর্যকে ব্যবহার করে প্রথমবারের মত সৌরশক্তি চালিত প্লেন Solar Impuls এর প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করে কোন ধরনের জ্বালানী ছাড়াই প্রায় ১৩ ঘন্টার আকাশ পথ পাড়ি দিয়ে সুইজারল্যান্ড থেকে উড্ডয়ন করে বেলজিয়ামে অবতরন করে সোলার ইমপালস।



সোলার ইমপালস এর এই যাত্রায় আকাশযানটি প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। যদিও এর আগে ২০১০ সালের এপ্রিলে প্লেনটি প্রথম আকাশে উড়ে এবং ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে। তবে গত শুক্রবারের এই যাত্রায় সোলার ইমপালসকে আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রাফিক নেটওয়ার্কের নেভিগেশন অনুসরন করতে হয়েছিল।

১০ অশ্বশক্তি যুক্ত চারটি মটর দ্বারা প্লেনটিকে প্রপেল করা হয়। আর শক্তির যোগান দেয়া হয় ১২,০০০ সৌরকোষ যুক্ত ২০০ মিটার লম্বা দুই পাখা থেকে। এই সৌরকোষগুলো থেকে উতপন্ন শক্তি সঞ্চয় করে রেখে রাতের বেলাও এটি আকাশ ভ্রমন চালিয়ে যেতে সক্ষম।

কোন প্রকার যান্ত্রিক বা আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা ছাড়াই এতটা পথ পাড়ি দেয়ায় সোলার ইমপালসের ডেভেলপার দলও যথেস্ট খুশি। বেলুনে চড়ে পৃথিবী ভ্রমনের জন্য বিখ্যাত Bertrand Piccard ও এই প্রজেক্টে রয়েছেন। সোলার ইমপালসের সফল ভ্রমন সম্পর্কে তিনি বলেন,

“I feel relieved. For the last month, my biggest nightmare was that the plane would not arrive due to technical problems or due to weather problems”

আগামী জুন মাসে সোলার ইমপালস বিখ্যাত প্যারিস এয়ার শোতে প্রদর্শন করা হবে। আর এর পরই প্রথম সৌরশক্তি চালিত আকাশযান হিসেবে পুরো পৃথিবী প্রদক্ষিন করার পরিকল্পনা রয়েছে এর নির্মাতাদের। যদিও বিমানটির গতি এবং ধারনক্ষমতা এখনো সন্তোষজনক নয়, তবে জ্বালানী ছাড়া আকাশ ভ্রমনের বিষয়টি সবার নজরে আনাই এই প্রজেক্টের মূল উদ্দেশ্য।



অনেক ডলার কামানোর উপায়

রচনা - কামরুল আলম




আজকাল যেখানেই যাই , শুধুই টাকার কথা শুনি। সবার মুখেই টাকা আর টাকা। কে কিভাবে টাকা রোজগার করবে সেটাই শুধু ভাবার বিষয়। কিন্তু সবাই চায় বিনা পরিশ্রমে টাকা পেতে !!! এটা কি সম্ভব ??? হ্যাঁ, সম্ভব । আপনি ও পারবেন অনেক টাকার মালিক হতে এবং সেটা বিনা পরিশ্রমে।



কিভাবে ??? হ্যাঁ , বলছি। টাকা নয় , নগদ ডলার এবং অনেক ডলার। ডলার দেখুন



এ ডলার গুলু আপনার করে নিতে চান??? তাহলে বসে পরুন আপনার কম্পিউটার নিয়ে। আপনি ও আয় করতে পারবেন অনেক ডলার। বর্তমানে সারা পৃথিবীতে শুধু ডলার উড়ছে। হাত বাড়িয়ে নিয়ে নিন এসব ডলার



অনলাইন এ ডলার কামানো অনেক সহজ ব্যাপার। সবাই অনলাইন থেকে শুধু ডলার কামাচ্ছে। বিনা পরিশ্রমে কামাচ্ছে ।  তো আপনি বাদ থাকবেন কেন???


আরও টাকা কামিয়ে নিন। কম্পিউটার এর কাজগুলো ভালভাবে শিখে কামাতে চলে আসুন অনলাইন এ । শুধু ইন্টারনেট ব্রাউস শিখেই টাকা কামানোর চিন্তা করবেন না তাহলে ডলার শুধু আপনার চোখের সামনে উড়বেই। ধরতে আর পারবেন না। আমার কথা শুনে আপনি নিরুৎসাহিত হবেন না। কাজ জানলে অবশ্যই ডলার কামাতে পারবেন কিন্তু বিনা পরিশ্রমে ডলার আয়ের চিন্তা করবেন না।
এ সাইটে এটা আমার প্রথম পোস্ট। বাস্তব কথা বলে কষ্ট দিলে ক্ষমা করবেন।

চোঁখ দিয়ে দেখতে চাইলেই বাদুড়ের বিপর্যয়

রচনা - কামরুল আলম


 বাদুড় জন্মান্ধ। শব্দের প্রতিধ্বনির মাধমে চলা ফেরা করে। শব্দের গতি প্রতি সেকেন্ডে সাধারন তাপমাত্রা (২০ ডিগ্রি) ও চাপে ৩৪৩ মিটার। বাদুড় নিজের পাখায় শব্দ করে এবং সেই শব্দ কত সময় পড়ে ফিরে আসে তার উপর ভিত্তিকরে সামনের বস্তু সম্পর্কে নিশ্চত হয়। অনেক সময় দেখা যায় কোন বিদ্যুতের তারের ধাক্কা খেয়ে বাদুড় মারা গেছে। বিদ্যুতের তার সরু হওয়ায় এটিতে শব্দ বাধা প্রাপ্ত হয় না এবং বাদুড় বুঝতেও পারে না। আর তাই মৃত্যু বরণ করে।

অন্ধকারে অপেক্ষাকৃত সঠিকভাবে চলতে পারে

বেশ কিছু বাদুড় অবশ্য চোখে কিছু কিছু দেখতে পায়। তবে তারাও শব্দ তরঙ্গের সাহায্যে চলাফেরা করে। একদল পরীক্ষক পরীক্ষা করে দেখতে পায় যে, অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশে বাদুড় সূক্ষভাবে চলাফেরা করতে পারে।


বেশ কিছু বাদুড়কে বিভিন্ন আলোর পরিবেশে লক্ষ্যবস্তুতে পাঠানোর সময় দেখতে পান যে (যে সব বাদুড় চোখে দেখে তারা) উজ্জল আলোতে লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে সঠিক ধারনা লাভ করতে পারেনি এবং লক্ষ্যবস্তুতে যাওয়ার আগে অনেকেই পড়ে যায়। মৃদু আলোতে সঠিকভাবে চলতে পেরেছে।
নেশাগ্রস্ত আবস্থায় সঠিকভাবে চলতে পারে

বাদুড়ের আরও একটা মজার বেপার আছে। ২০০৯ সালে এপ্রিল মাসে সালিভা ও তার সহযোগিরা ছয় প্রজাতির ১০৬ ছয়টি বাদুড়ের উপর পরীক্ষা চালান। এদেরকে এলকোহল খাওয়ানো পর উড়তে দিলে তারা স্বাভাবিকের চেয়ে সঠিকভাবে পৌছে যায় লক্ষ্যবস্তুতে।

সাপ যখন আকাশে উড়ে

রচনা - কামরুল আলম

সাপ কি আকাশে উড়তে পারে? পারে বৈকি। তবে সব গুলো নয়। মোটামুটি ৫ প্রজাতির সাপ উড়তে পারে। তবে এই উড়াকে পাখির আকাশে উড়ার সাথে তুলনা করা যাবে না। সাপের উড়ার পদ্ধতি অনেকটা গ্লাইডিং এর মত। মোটামুটি ৮০ ফিট দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম এরা। লাফ দেয়ার সময় এরা সরাসরি নিচের দিকে না পড়ে কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। অনেকটা গ্লাইডার এর মত এরা একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছে উড়ে যায়।


বিজ্ঞানিরা সাপের উড়ার ছবি এবং ভিডিও ধারন করেছেন। তারা গবেষনা করেছেন সাপ কিভাবে এই কাজটি করে থাকে। ‘আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি’ লং বিচে হওয়া এক মিটিং এ বিশ্লেষন করার চেস্টা করেছেন সাপের উড়ার পদ্ধতিটি। তাদের মতে, উড়ার সময় সাপ তাদের ওজন কমিয়ে ফেলছে না বা অসম্ভব কিছুও করছে না। এধরনের সাপগুলো শরীরের আকৃতি অনেকটা ভোঁতা যা উর্ধমূখী বাতাসের দ্বারা কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। আর সাপের আকৃতি অনেকটা এরো ডায়নামিক অর্থাৎ দ্রুতগতিতে সামনের দিকে যাওয়ার সময় বাতাসের দ্বারা খুব একটা বাধাপ্রাপ্ত হয় না। চিতা কিভাবে দ্রুত দৌড়াতে পারে এই সম্পর্কিত একটি পোস্টে এরো ডায়নামিক শেপ নিয়ে লেখা হয়েছে। এধরনের সাপগুলো একটু বেশি শক্তিশালী হয়ে থাকে। উড়ার পূর্বে এরা শরীরকে বিশেষ একটি আকৃতিতে নিয়ে আসে এবং তীব্র বেগে সামনের দিকে ছুঁড়ে দেয়। এরপর শরীরকে আগ-পিছ করে বাতাসের সাথে একটি সামঞ্জস্যতা তৈরি করে নেয় যা এটিকে অনেকটা সামনের দিকে নিয়ে যায়।

একদল বায়োলজিস্ট উড়ন্ত সাপকে ৪৯ ফিট উঁচু টাওয়ার থেকে ছেড়ে দেয়া এবং এর উড়ার দৃশ্যটি ভাল মানের ক্যামেরায় ধারন করা হয়। এরপর সেই ভিডিও বিশ্লেষন করে তারা বিভিন্ন তথ্য বের করেন। সাপের উড়ার এই পদ্ধতির উপর নির্ভর করে বিশেষ ধরনের আকাশযান তৈরির কথাও তারা ভাবছেন যেটি কম জ্বালানি খরচ করবে।


জোনাকী পোকার আলোর রহস্য

রচনা - কামরুল আলম



শহরে যারা থাকেন, তাদের কথা তো জানিনা- কিন্তু গ্রামাঞ্চলের দিকে যারা থাকেন বা কোন এক সময় থেকেছেন তাদের জোনাকী দেখার কথা। আমার যতদূর মন পড়ে, বসন্তের শেষে বা গ্রীষ্মের দিকে সন্ধ্যায় গ্রামে জোনাকি উড়তে দেখেছি। টিমটিমে আলোর অপূর্ব শোভা দেখিয়ে তাদের এদিকওদিকে ঘুরে বেড়ানো রাতে প্রকৃতিতে অনন্য দৃশ্যের অবতারণা করে। খুব কাছ থেকে না দেখলে এদের এই আলো সবার কাছে একটা রহস্যই থেকে যায়।

যারা দেখেছেন তাদের মনে কি আদৌ প্রশ্ন জাগেনি যে- এই স্বয়ংপ্রভ নীলাভ-সবুজ দ্যুতির সত্যিকারের রহস্য কি? আসে কোত্থেকে এই আলো ?

আজ ভাবলাম, এই বিষয়ে একটা নিবন্ধ লিখব। তাই উইকিপিডিয়া আর গুগলে লাঙল নামিয়ে দিলাম।

খুব কাছ থেকে তোলা ছবিতে দেখলে বুঝতে পারবেন এই রহস্যের উৎপত্তি সম্পর্কে। দেখা যায় যে, এই পতঙ্গটির তলপেটের দিক থেকে এই আলোর উৎপত্তি। বাস্তবিকই তাই। জোনাকির বা Lampyris noctiluca এর তলপেটের শেষের দিকে আলাদা একটি উপাঙ্গ আছে, যেখান থেকে এই আলোর উৎপত্তি হয়। এই প্রত্যঙ্গ হতে লুসিফেরিন নামক এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয় যা জোনাকির শ্বাসনালী দ্বারা গৃহীত অক্সিজেন দ্বারা জারিত হয়। এই জারণ বা অক্সিডেশনে লুসিফারেজ নামক জৈবঅনুঘটক বা এনজাইম সহায়তা করে। জারণ বিক্রিয়াটিতে যে পরিমাণ শক্তি বা আলো উৎপন্ন হয়, তার মাত্র ২% হল তাপ। তাই এই আলো এতটা স্নিগ্ধ মনে হয়। ঐ বিশেষ অঙ্গটির স্নায়ু দ্বারা এই আলোর স্থায়িত্ব নিয়ন্ত্রিত হয়।

এই আলো তারা ব্যবহার করে তাদের বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করতে। স্ত্রী প্রজাতির জোনাকিরা এই আলো দিয়ে পুরুষ জোনাকিকে আকর্ষণ করে, ডিম পাড়ে এবং মারা যায়। নিষেকের পর লার্ভা দশায় অনেকদিন অবস্থান করতে হয় তাদের। তবে এই আকর্ষণের ব্যাপারটা প্রজাতিভেদে ভিন্ন। যেমন, আমেরিকায় এক প্রকারের জোনাকি আছে, যাদের পুরুষ প্রজাতি পাঁচ সেকেন্ড অন্তর জ্বলে উঠে, আর এর প্রতিক্রিয়ায় মাটিতে অপেক্ষমান স্ত্রী জোনাকি দুই সেকেন্ড পর পর জ্বলে উঠে। এভাবে তারা মিলন সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদান করে।

**এই সম্পর্কে ইন্টারনেটে আপনি ছবি দেখতে চাইলে Google Image Search এ গিয়ে Lampyris noctiluca লিখে Search দিন।

তথ্যসূত্র:

* en.wikipedia.org
* How Things Work- Webpage

তীরের মতোই সোজা পথে চলে তিমি

রচনা - কামরুল আলম

 তিমি মাছের বেশ কিছু মজার মজার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সাম্প্রতিক আরেকটি জিনিস জানা গেছে তা হলো তারা হাজার হাজার মাইল পথ অতিক্রম করতে পারে একদম সোজাসুজিভাবে। অনেকটা কম্পাসের মতো একটা সুনিদিষ্ট পথ অতিক্রমের মতো বা তার চেয়েও সূক্ষ কিছু একটা।


অনেকে বিশ্বাস করে অনেক প্রানীর ভেতরেই কম্পাস আছে এবং তারা নির্দিষ্ট দিক সম্পর্কে অবগত থাকে যার মাধ্যমে সু-নির্দিষ্ট পথ খুজে পেতে পারে।

সাধারনতঃ জেলেরা সূর্যকে অনুসরণ করে পথ চলে। অনেক পাখিই হাজার হাজার মাইল পারি দিয়ে আসে এবং সঠিকভাবেই তাদের নিজ আবাস্থলে ফিরে যেতে সমর্থ হয়। তবে বিজ্ঞানীরা এখনো সেইসব রহস্যের মৌলিক কোন কারন খুজে বের করতে পারে নাই।

University of Canterbury ‘র বিজ্ঞানী হর্টন এবং তার সহকর্মীরা ১৬ টি তিমির একটি দলকে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা মূলতঃ ভূ-উপগ্রহ ট্র্যাকিং টেকনোলজী ব্যবহার করে এবং তিমিদের অনুসরণ করতে থাকে।

ব্রাজিরের পশ্চিম প্রান্ত থেকে তারা তিমি মাছগুলোকে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন এবং তিমিগুলো ৬০০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে এন্টারর্টিকের পানিতে পৌছায়। তিমিগুলো ১০০ থেকে ২০০০ কিলোমিটার পথ পর্যন্ত সোজা ভাবে চলেছে।

হর্টন জানান, তাদের চলার পথে কখনো ১ ডিগ্রীও বাঁক দেখা যায় নি।বর্তমান বিশ্বের সেরা টেকনোলজীর বিমান বা জাহাজ দিয়েও এমন সোজা পথ অতিক্রম করা বেশ কঠিন বেপার। বিশেষ করে সমুদ্রের ঢেউ, সূর্যের অবস্থান এবং কম্পাসের চলাফেরা সবই বেশ আপেক্ষিক।

রহস্যময় বারমুডা ট্রায়াঙ্গল

রচনা - কামরুল আলম


বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের গা ছমছম করা সেই গল্পগুলো কি মনে পড়ে আপনাদের? বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে লেখা গল্পগুলো বরাবরই জনপ্রিয়। তবে এটা জানেন কি? উত্তর -পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত ভয়ানক রহস্যময় সেই বারমূডা ট্রায়াঙ্গল এর রহস্যভেদ করা হয়েছে? অবশ্য এর রহস্যভেদ করা হয়েছে অনেক আগেই, সেই ১৯৭৫ সালে!


(মানচিত্রে বারমুডা ট্রায়াঙ্গল)

যারা এখনো বারমুডা ট্রায়াঙ্গল সমন্ধে জানেননা তাঁদের জন্যে বলছি-

ক্যারিবীয় সমুদ্রে এর অবস্থান। ত্রিভূজাকৃতির এই জায়গাটাকে ঘিরে তৈরী হয়েছে অজস্র গল্প। রহস্যজনক কোনো কারণে এই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজ আর উড়োজাহাজ নিখোঁজ হয়ে যায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো নিখোঁজই থেকে যায়। এই বারমূডা ট্রায়াঙ্গলকে নিয়ে রচিত হয়েছে অসংখ্য গল্প, নির্মিত হয়েছে প্রামান্যচিত্র এমনকি চলচ্চিত্রও! বারমুডা ত্রিভূজের তিন প্রান্তের এক প্রান্ত ছুঁয়েছে বারমুডায়, এক প্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মায়ামি এবং আরেকটি প্রান্ত স্পর্শ করেছে পুয়োর্তরিকোর সাজ জুয়ান।

১৯৫০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখে অ্যাসোসিয়েট প্রেসের এক প্রবন্ধে সাংবাদিক ই ভি ডাবলিউ জোনস প্রথম বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের অস্বাভাবিক ঘটনার কথা লিখে একে নজরে আনেন। ১৯৫২ সালে ‘ফেট’ ম্যাগাজিন-এর জর্জ এক্স সান্ড লিখেন “সি মিসট্রি অ্যাট আওয়ার ব্যাক ডোর”। জর্জ এক্স সান্ড ৫ জন ইউএস নেভি সহ ১৯ নং ফ্লাইটের নিখোঁজ সংবাদ ছাপেন। শুরু হয় বারমূডা রহস্য!

(এই সেই জ্ঞানী বই)

অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভারসিটির গ্রন্থাগারিক লরেন্স ডেভিড কাসচি ১৯৭৫ সালে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য ভেদ করেছেন দাবী করেন! “দ্য বারমুডা ট্রায়াঙ্গল মিসট্রি : সলভড” নামের বইটি প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন তিনি। কাসচি বলেন আসলে বারমূডা ট্রায়াঙ্গলকে নিয়ে অতিরঞ্জিত গল্প ছড়ানো হয়েছে, এটাকে ’মিসটিফাই’ করা হয়েছে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে গায়েব হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। তিনি যুক্তি দেখান-

১) বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে নিরুদ্দিষ্ট জাহাজ ও উড়োজাহাজের সংখ্যা পৃথিবীর অন্যান্য এলাকার চেয়ে তুলনামূলকভাবে খুব বেশি নয়।

২) সমুদ্রের ওই বিশেষ জলসীমায় প্রায়ই ট্রপিক্যাল ঝড় ভয়ঙ্কর রুপ নেয়, কাজেই ঝড়ের ঘূর্ণিপাকে জলযান নিঁখোজ হওয়াটা কি রহস্যময় ? সাংবাদিক ই ভি ডাবলিউ জোনস, জর্জ এক্স সান্ড প্রমূখ যারা বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ঘিরে রহস্য ছড়িয়ে দিয়েছেন তারা ঝড়ের ব্যাপারটা কৌশলে এড়িয়ে গেছে।

৩) বারমুডা ট্রায়াঙ্গলে গায়েব হয়ে যাওয়া জাহাজ/উড়োজাহাজ সংখ্যা যত না বেশি- তার চেয়ে বেশি দাবী করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি জাহাজ নিখোঁজ হলে সিরিয়াসলি রিপোর্ট করা হয়েছে কিন্ত ফিরে এলে সে ব্যাপারে সবাই নিশ্চুপ থেকেছে।

৪) কোনও কোনও সময়ে নিরুদ্দেশের ঘটনাই ঘটেনি। বলা হয়েছে ১৯৩৭ সালে একটি প্লেন ক্র্যাশ করেছে। আসলে অমন কিছুই ঘটেনি।

৫) আসলে বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের রহস্য হল ‘প্রস্তুতকৃত রহস্য’ বা ‘ম্যানুফাকচারড মিসট্রি ‘ যা লেখকরা ভুল ধারণার ওপর জিইয়ে রেখেছেন, এর পিছনে কাজ করেছে মিথ্যে যুক্তি আর রগরগে কাহিনী ছড়ানোর বাতিক।


(বারমুডা ট্রায়াঙ্গল নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র)

তা যা-ই হোক, সাংবাদিক সাহেবের এতো যুক্তি কিন্ত মানুষের মন থেকে রহস্যের গন্ধ্ দূর করতে পারেনি। যুক্তিতে কি সব হয়? আমরাতো জানি ‘ভূত’ বলে কিছু নেই, তবু কি আমরা ভূত তাড়াতে পেরেছি?


ডেড সী বা মৃত সাগরের রহস্য

রচনা - কামরুল আলম


জর্ডানে অবস্থিত ডেড সী বা মৃত সাগর পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে লবনাক্ত জলাশয় গুলোর মধ্যে একটি। সাগর বলা হলেও এটি মূলত একটি লেক যার সর্বোচ্চ গভীরতা ১,২৪০ ফুট। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থে সর্বোচ্চ ১৮ কিলোমিটার। এবার চলুন ডেড সী এর রহস্য সম্পর্কে আরও কিছু জানা যাক।

ডেড সী বা মৃত সাগর কে মৃত বলা হয় কেন?




কারন এ সাগরে কোন মাছ বা জলজ প্রানি বাঁচে না। কেবল কিছু ব্যক্টরিয়া ও ছত্রাক জাতীয় অনুজীব পাওয়া যায়। এ জন্যই একে মৃত সাগর বলে। এতে কোন মাছ নেই বলে এর উপর দিয়ে কোন পাখিও উড়ে না।

ডেড সী বা মৃত সাগরে কোন মানুষ ডুবে যায় না কেন?

সবাই জানে ডেড সী বা মৃত সাগরে কোন মানুষ ডুবে যায় না। কারন কি তা জানেন? কারন হল মৃত সাগরে পানির ঘনত্ত্ব খুব বেশি। পানির ঘনত্ত্ব বেশির কারন হচ্ছে লবন। অন্যান্য মহা সাগরে লবনের পরিমান শতকরা ৫% – ৬%। কিন্তু এ মৃত সাগরে লবনের পরিমান ২৫% – ৩০%। তাছাড়া এর লবনাক্ততা স্বাভাবিক সাগরের থেকে ৮.৬ গুন বেশি।




লবনের কারনে এখানে অনেক সাগরের ঢেঁউয়ে অনেক ফেনা জন্মে, এবং তীরে অনেক লবন জন্মে।

তাছাড়া অন্যান্য সাগরের রাসায়নিক উপাদানের থেকে এ সাগরের রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।




আর পানির এ ঘনত্ত্বের কারনে এখানে প্লবতা বেড়ে যায়। প্লবতা আবার কি তাই না?


প্লবতা বা buoyancy হচ্ছে, কোন তরল পদার্থে অন্য কোন পদার্থ নিমজ্জিত (ঢুবালে) করলে উপরের দিকে এক প্রকার বল প্রয়োগ করে এবং ঐ পদার্থের ওজনকে বাধা দেয়, এই বাধা দান কারী বল ই হচ্ছে প্লবতা। প্লবতার কারনে কোন বস্তু মৃত সাগরে ফেললে তা ভাসিয়ে রাখে। তাই মানুষ এ মৃত সাগরে বসে বা শুয়ে থাকতে পারে।

ধন্যবাদ সবাইকে।



গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জঃ একটি প্রাকৃতিক বিস্ময়

রচনা - কামরুল আলম





বিজ্ঞান নিয়ে যাদের একটু-আধটু জানাশোনা আছে তাদের সকলেই বিবর্তনবাদের জনক চার্লস ডারউইনকে চেনেন আর তারঅরিজিন অব স্পিসিস সম্পর্কেও বলার প্রয়োজন নেই ১৮৬৯ সালের ২৪শে নভেম্বর প্রকাশিত হওয়া তার এই বইয়ের বদৌলতে ঊনবিংশ শতাব্দীতে উদ্ভিদবিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের কেবল দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টায়নি, সমগ্র বিশ্বে তুলে দিয়েছিলো অস্তিত্বের মূল সন্ধানের ঝড় সেই বইটির বহুলাংশে একটি দ্বীপের বর্ণনাই তিনি দিয়েছেন

প্রকৃতিবিদ হিসেবে যখন তিনি ধীরে ধীরে খ্যাতি লাভ করতে শুরু করেছিলেন আকস্মিকভাবেই তার জন্য সুযোগটা আসে ইংল্যান্ডের রাজকীয় নৌবাহিনীর তৃতীয় জাহাজ, এইচ.এম.এস. বিগলে প্রকৃতিবিদ হিসেবে ভ্রমণের সুযোগ পান প্রায় চার বছর ধরে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব পশ্চিম উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অঞ্চল ঘুরে ডারউইন গ্যালাপাগোসে আসেন



গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ (ইংরেজি ভাষায়: Galápagos Islands; মূল স্পেনীয় নাম: Archipiélago de Colón) বেশ কিছু আগ্নেয় দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপপুঞ্জ দ্বীপের আবিষ্কার যদিও ১৫৩৫ সালে হয়, তারও তিন শতাব্দী পর্যন্ত কেউ এর ধারে কাছে ঘেঁষেনি কারণ, জায়গাগুলো ছিলো দুর্গম ভয়ঙ্কর একমাত্র তিমি শিকারি জলদস্যুদেরই আশ্রয়স্থল ছিল প্রশান্ত মহাসাগরে বিষুব রেখার দুই পাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই দ্বীপগুলো মহাদেশীয় ইকুয়েডর থেকে ৯৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত বর্তমানে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে, মূলত তার অনন্যসাধারণ জীববৈচিত্র্যের কারণে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ইকুয়েডরের গালাপাগোস প্রদেশের অন্তর্গত এবং দেশটির জাতীয় পার্ক সিস্টেমের অংশ দ্বীপপুঞ্জের মানুষদের প্রধান ভাষা স্প্যনিশ

এর খ্যাতি আরও একটি কারণে মানুষের মুখে মুখে ছিল কারণটা ছিল এর অদ্ভুত প্রকৃতির ঢেউগুলো কখনো এই ঢেউগুলো এতই তীব্র হয় যে, এর টানে জাহাজ-নৌকাগুলো প্রচন্ড গতিতে গ্যালাপাগোসের গায়ে আছড়ে পড়ত আবার কখনো এই ঢেউগুলোই জাহাজ-নৌকাগুলোকে দূরসমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যেত এই অদ্ভুত আচরণের জন্য স্প্যনিশ নাবিকেরা এর নাম দিয়েছিলপেন্ডিমোনিয়াম বানরকের স্বর্গ

এখানকার প্রাণীগুলো অন্যকোথাও তেমন একটা দেখা যায় না বিষুবীয় অঞ্চলের উভয়পাশে দ্বীপগুলোর অবস্থান হবার কারণে সূর্যরশ্মি দ্বীপের সর্বত্র লম্বভাবে আপতিত হয় যার ফলে দ্বীপের সবখানেই তীব্র গরম পৃথিবীর মাঝে এই ধরণের স্থান খুবই কমই আছে

দ্বীপগুলো পাশাপাশি অবস্থিত হলেও প্রত্যেকটির প্রাণীর মধ্যে প্রচন্ডরকম অমিল ডারউইন এই অঞ্চলের বড় বড় কচ্ছপ, ইগোয়ানা, শীল, কাঁকড়া, ফিঞ্চ, পেলিক্যান, হরবোলা, প্রভৃতি প্রাণী লক্ষ্য করেন

সবচেয়ে খ্যাতিমান হলো ফিঞ্চ এগুলোকেডারউইনের ফিঞ্চ বলে অভিহিত করা পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে এই ধরণের পাখি খুব একটা দেখা যায় না বললেই চলে
দ্বীপগুলোর মধ্য পারস্পরিক দূরত্ব ৭০-৮০ কি.মি. এর বেশি নয় তার পরেও এদের ভূপ্রকৃতি, জলবায়ু এবং বাস্তুতান্ত্রিক অসামঞ্জস্য অবাক করার মতোই প্রত্যকটি উপাদানের মধ্যে স্বকীয় অভিযোজনের কারণ আজও অমীমাংসিত ডারউইন তাঁর পাঁচ সপ্তাহের সফরে যে উপাত্ত সংগ্রহ করেছিলেন তা নিয়ে আজো প্রকৃতিবিদরা নিমগ্ন

তথ্যসূত্র:
. ডারউইন: বিগলযাত্রীর ভ্রমণ কথা- দ্বিজেন শর্মা (১৯৯৯)
. বাংলা উইকিপিডিয়া (bn.wikipedia.org)

বৈচিত্রপূর্ন ও বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক মাছ

রচনা - কামরুল আলম




বৈচিত্র্যময় প্রাণিজগতে বিচিত্র প্রাণির বসবাস সাগর তলের প্রাণিজগতের বৈচিত্র্য আরো বিস্ময়কর সাগরতলের এটি বিস্ময়কর প্রাণির নাম বিদ্যুৎ মাছ ইংরেজিতে ইলেক্ট্রিক ফিশ বলা হয় ইলেক্ট্রিক ফিশ বা বিদ্যুৎ মাছ এমনই একটি মাছ, যেটা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে একটি ইলেক্ট্রিক ফিশ তার বৈদ্যুতিক অঙ্গের শক দ্বারা একটি শক্তিশালী ঘোড়াকে মুহূর্তের মধ্যে কাবু করে ফেলতে পারে যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপাদনে সক্ষম তাকে বলা ইলেক্ট্রোজেনিক মাছ আর যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র শুধু সনাক্ত করতে পারে তাকে ইলেকট্রোরিসেপটিভ মাছ বলা হয়



ইলেক্ট্রিক ঈল ফিশ

ইলেক্ট্রিক ঈল ফিশ

কিছু মাছ আছে যারা ইলেক্ট্রোজেনিক এবং ইলেকট্রোরিসেপটিভ উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্য বহন করে হাঙ্গর, বিভিন্ন রে ফিশ এবং ক্যাট ফিশ ইত্যাদি মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপন্ন করতে অক্ষম এজন্য এদের বিদ্যুৎ মাছের শ্রেণীভুক্ত করা হয়নি লোনা স্বাদু উভয় ধরনের পানিতে বিদ্যুৎ মাছ পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা এবং দক্ষিন আফ্রিকার সাগর নদীর স্বচ্ছ পানিতে মাছ পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতের বৈদ্যুতিক মাছের মধ্যে একেক জাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক ধরনের ইলেক্ট্রিক ইল নামক মাছ শুধু রাতের বেলায় শিকার খুঁজতে বের হয় এর ইলেক্ট্রিক শকের ক্ষমতা এত বেশি যে বড় প্রাণীও ঘায়েল হয়ে যায় দক্ষিণ আমেরিকার নদনদীতে এবং খালবিলে এই বিপজ্জনক মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বিদ্যুৎ মাছ তার বিশেষভাবে গঠিত যে অঙ্গ থেকে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় ইলেক্ট্রিক অর্গান বা বৈদ্যুতিক অঙ্গ এই অঙ্গ পরিবর্তিত পেশি বা স্নায়ুকোষ দ্বারা বিশেষভাবে গঠিত শুধু বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরী করার জন্যই এই বৈদ্যুতিক অঙ্গ বৈদ্যুতিক মাছের লেজে অবস্থিত অঙ্গ থেকে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক শক্তিকে ইংরেজীতে বলা হয় Electric Organ Discharge. সংক্ষেপে EOD ইলেক্ট্রিক ফিশ দুধরণের- শক্তিশালী দুর্বল শক্তিশালী ফিশ ১০


ইলেক্ট্রিক রে ফিশ
ইলেক্ট্রিক রে ফিশ

থেকে ৫০০ ভোল্ট বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারে যেমন- ইলেক্ট্রিক ইল, ইলেক্ট্রিক রে, ইলেক্ট্রিক ক্যাটফিশ দুর্বল ফিশ কম বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে যেটুকু বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে তা পথ চলা,বস্তু সনাক্তকরণ যোগাযোগ করতে সক্ষম যেমন- Gnathomemus Petersi এবং Apteronotus Albifrons. বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত প্রায় তিন রকম মাছের সন্ধান পেয়েছেন, যেগুলো . থেকে ভোল্ট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম এগুলো সাধারনত নিরীহ প্রকৃতির এবং চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে তবে প্রকৃতিগতভাবে ভয়ংকর
 

সুন্দরবন

রচনা - কামরুল আলম

 সুন্দরবন



বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত এই বনের আকার দশহাজার বর্গকিলোমিটার, যার ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশের ভূখন্ডে। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অবস্থান করে নেয়া এই বনভূমির প্রায় ৩১ শতাংশই নদীনালা আর খালবিল, যার পরিমান ১,৮৭৪ বর্গকিলোমাটার। ১৯৯২ সালে এটি রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।


নামকরণঃ
বাংলায় সুন্দরবন”-এর আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গলবা সুন্দর বনভূমি। সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়ে থাকতে পারে, যা সেখানে প্রচুর জন্মায়। অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যা এরকম হতে পারে যে, এর নামকরণ হয়তো হয়েছে সমুদ্র বনবা চন্দ্র-বান্ধে (বাঁধে)” (প্রাচীন আদিবাসী) থেকে। তবে সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে সুন্দরী গাছ থেকেই সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে।
বনজ সম্পদঃ


উদ্ভিদঃ


প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী (Heritiera fomes) সহ গেওয়া (Excoecaria agallocha), গরান (Ceriops decandra) এবং কেওড়া (Sonneratia apetala) সুন্দরননের প্রধান প্রধান উদ্ভিদ। প্রেইন এর হিসাব মতে (১৯০৩ সালে) এখানে ২৪৫টি শ্রেনী ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের বেশির ভাগ ম্যানগ্রোভে Rhizophoraceae, Avicenneaceae বা Laganculariaceae শ্রেণীর গাছের প্রাধাণ্য থাকলেও বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভে প্রাধাণ্য Sterculiaceae এবং Euphorbiaceae শ্রেণীর গাছের ।


প্রানীঃ


সুন্দরবনের কতৃত্ব করা প্রানী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ২০০৪ সালের হিসাব মতে এখানে ৫০০ রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে। কচ্ছপ (River terrapin – Betagur baska, Indian flap-shelled turtle – Lissemys punctata এবং Peacock soft-shelled turtle – Trionyx hurum), গিরগিটি Yellow monitor – Varanus flavescens Water monitor – Varanus salvator), অজগর (Python molurus) এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Panthera tigris tigris) সুন্দরবনের স্থানীয় প্রজাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ (Hog deer – Axis procinus Swamp deer – Cervus duvauceli), মহিষ (Bubalis bubalis), গন্ডার(Javan rhinoceros – Rhiniceros sondaicus Single horned rhinoceros – Rhinoceros unicornis) এবং কুমিরের (Mugger crocodile – Crocodylus palustris) এর মত কিছু কিছু প্রজাতি সুন্দরবনে বিরল হয়ে উঠেছে ২১ শতকের শুরু থেকে। বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাজাতির আবাসস্থল। এ থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির একটি বড় অংশ বিদ্যমান (যেমনঃ ৩০ শতাংশ সরীসৃপ, ৩৭ শতাংশ পাখি ও ৩৭ শতাংশ স্তন্যপায়ী)।
(তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)