শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৩

মাত্র ৪০ দিনে কামান ছয় লক্ষ টাকা ( একেবারেই বাস্তব)

রচনা - কামরুল আলম

 
ব্যবসা করার জন্যে বাংলাদেশের মত উপযুক্ত জায়গা আর হয় না। সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবসাটি জানলে বাম্পার লাভ। যেসব ব্যবসায়ীদের চোখ কান খোলা তারা দেদারসে কামাই করে যাচ্ছেন। লস হচ্ছে না। আমি এখন যেই ব্যবসায়ির কথা আলাপ করব তিনি অনেক স্মার্ট ব্যবসায়ী। তার লস হয় কম। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই সে কামিয়েছে অনেক। সঠিক সময়ের বিনিয়োগে সে এক্সপারত।

এবারে মাত্র ৪০ দিনে সে কামাই করেছে ৭০০০০০ ( সাত লক্ষ টাকা মাত্র ) ।
রোজার সপ্তাহ খানেক আগে সে পিয়াজ কিনেছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার ( ৩৫০ বস্তা) । প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে। ঈদের আগে এবং পরে সহ সব পিয়াজ বিক্রি করেছে গড়ে ৬০ টাকা দরে ( পিয়াজের বর্তমান বাজার দর ৭৫ টাকা কেজি)। নষ্ট পিয়াজ, গোডাউন খরচ, লেবার খরচ ও অন্যান্য খরচ বাদে নীট লাভ ৬০০০০০ ( ছয় লক্ষ টাকা মাত্র )। আপনার তিন লক্ষ টাকা দশ বছর ব্যাঙ্কে রাখলে হয়ত এই লাভ পাবেন। তাও মূল্য স্পিতি হিসাবে আনলে নীট লাভ আরও কমে যাবে। আমাদের শিক্ষিত জনতার মিথ্যা সম্মান বোধ এর কারনে ও মূলধনের কারনে তারা আজ ব্যবসার সুফল থেকে পিছিয়ে।

এই ব্যক্তিই বাজেটের আগে দেখেছি দেদারসে সিগারেট কিনছেন। তার নিজস্ব গোডাউন আছে তাই সুবিধা। বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট। যেসব সিগারেট এর দাম বেশি বাড়বে সেগুলো বেশি কিনেছেন ( বিভিন্ন কোম্পানির টেরিটরি অফিসারদের ঘুষ দিলে এ সব খবর সহজে মিলে )। বাজেটের পরে সেই সিগারেট কোম্পানির চেয়ে কম রেটে বাজারে ছেড়েছেন। নীট লাভ কল্পনাতীত। সময় ও অনেক কম।

তবে সময়ের এই ব্যবসায় অনেক সময় লস ও হয়। লসের পরিমান লাভের চেয়ে অনেক কম। বাজার বুঝে মাল ছেড়ে দিতে পারলে তেমন লস হয় না। যেমন চিনির দাম বাড়বে বলে চিনি কিনে ধরা খেয়েছিলেন।

এই ব্যক্তি সবচেয়ে লাভ করেছিলেন পাম অয়েলের ব্যবসায়। এখন যদিও পাম অয়েলের সেই ব্যবসা নেই। বাজারে দাম পরতির দিকে।
এই রকম সময়ের ব্যবসায় ব্যবসায়ীদের যা জানতে হয় তা হল
১. বাজেতে প্রতি বছর কিসের দাম বাড়ে ( সিগারেট অবশ্যই)
২. রমজানে কিসের দাম বাড়ে ( পিয়াজ, রসুন, আদা অবশ্যই- এবার চিনির দাম বাড়েনি কিন্তু প্রতিবছর ই চিনির দাম বাড়ে )
৩. কুরবানির আগে কিসের দাম বাড়ে ( পিয়াজ, রসুন, আদা অবশ্যই )
৪. পহেলা বৈশাখে কিসের দাম বাড়ে ( ইলিশের দাম)
৫. অন্যান্য অনুষ্ঠানে কিসের দাম বাড়ে ( বিজয় দিবসে ফুলের দাম )
৬. আদার ব্যপারির জাহাজের খবর আগে রাখত না, এখন রাখলে বহুত লাভ। কোন কোন মৌসুমে কি কি কত পরিমাণে আমদানি হবে এবং সেই অনুযায়ী ঘাটতি কেমন হবে। যত ঘাটতি তত লাভ। যে পন্য প্রয়জনের অধিক আমদানি হয় সেই পন্য বাদ দিতে হবে, এসবে সর্বদাই লস হয়।
৭. কাচামালের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত চোখ কান খোলা রাখতে হয়।
আরও কিছু টিপস আছে হয়ত, আমাকে তো সব বলবে না, তাই না। মূলধন আর আগ্রহ থাকলে নেমে পড়তে পারেন।
সমাজে এই লোকগুলোকে আমরা মজুদদার হিসেবে জানি। এদের কারনেই মূল্য ব্রিদ্দি ঘটে। সমস্ত অতিরিক্ত টাকা এদের পকেতেই যায়। এরা অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফা অর্জন করে। মাতাপিতা ছাড়া এই বাংলাদেশে এদের প্রভাব ব্যপক। ঈদে এরা প্রচুর দান খয়রাত করেন। বড় বড় পার্টির বড় বড় নেতাদের সাথে এদের থাকে ব্যপক দহরম মহরম। এরাই এই ঘুণে ধরা সমাজের প্রভাবশালী ও প্রতাপশালী ব্যক্তি। এদের কেই আমরা সর্বাধিক সম্মান দেই। এদের কেই আমরা দাওয়াত দিয়ে খাওয়াইতে পসন্দ করি। এরা বাসায় আসলে আমরা ধন্য হই।
তাই এই লোকদের কাতারে আস্তে চাইলে উপরের ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

you can make a sound