বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৩

মোমবাতি তৈরির ব্যবসা

রচনা - কামরুল আলম
 
মোমবাতি তৈরি ব্যবসা 



দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে মোমবাতি অন্যতম। অল্প খরচের মধ্যে আলো পেতে মোমবাতি খুবই উপকারি পণ্য। কাঁচামাল হিসেবে প্যারাফিন ব্যবহার করে খুব সহজে মোমবাতি তৈরি করা যায়। বর্তমান সময়ে প্রয়োজনীয় সময়ে আলো দানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব, এমনকি শো পিস হিসেবেও নানা রঙ ও আকৃতির মোমবাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।  একজন বেকার নারী বা পুরুষ নিজের কর্মসংস্থানের জন্য মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

                          

          

                      ছবি: মোমবাতি 
                      ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর,ঢাকা।

বাজার সম্ভাবনা
গ্রাম বা শহর সব জায়গার মানুষ মোমবাতির ব্যবহার করে। মোমবাতি তৈরি করে নিজ এলাকা বা এলাকার বাইরে মুদি দোকান গুলোতে পাইকারী দরে বিক্রি করা যেতে পারে। সাধারণত বিভিন্ন আকৃতির নকশা করা নানা রঙের মোমবাতির চাহিদা মূলত: শহরেই বেশি দেখা যায়। এ জাতীয় মোমবাতি শহরের সৌখিন পণ্য বিক্রির দোকানে সরবরাহ করা যেতে পারে।

ছবি: মোমবাতি প্যাকেটজাতকরণ
ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর,ঢাকা।

 মূলধন 
আনুমানিক ৭৫০০-৮০০০ টাকার স্থায়ী উপকরণ এবং ৮০০-১০০০ টাকার কাঁচামাল কিনে মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন নিজের কাছে না থাকলে স্থানীয় ঋণদানকারী ব্যাংক(সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক , রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক)বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক, প্রশিকা) থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।

প্রশিক্ষণ 
প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য মোমবাতি তৈরীতে অভিজ্ঞ এমন কোন ব্যক্তি, স্থানীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক), যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান 
 স্থায়ী উপকরণ
উপকরণ
পরিমাণ
আনুমানিক মূল্য (টাকা)
প্রাপ্তিস্থান
কড়াই
১টি
১০০-১২০
তৈজসপত্রের দোকান
পাত্র
২টি
৬০-৬৫
তৈজসপত্রের দোকান
ছুরি
১টি
২৫-৩৫
তৈজসপত্রের দোকান
কাঁচি
১টি
৬০-৮০
স্টেশনারি দোকান
চামচ
৩টি
৬০-৭০
তৈজসপত্রের দোকান
মগ
১টি
১০-১৫
তৈজসপত্রের দোকান
বালতি
১টি
৬০-৬৫
তৈজসপত্রের দোকান
কৌটা
৪টি
২০-২৫
স্টেশনারি দোকান
ডাইস
১টি
,০০০-৭৫০০
তৈরি করে নেয়া যেতে পারে
মোট=৭,৩৯৫-৭৯৭৫ টাক
                            
                            

      তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা, নভেম্বর ২০০৯।

                         ছবি: মোমবাতি বানানোর ডাইস
                         ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

  • কাঁচামাল
উপকরণ
পরিমাণ
আনুমানিক মূল্য (টাকা)
প্রাপ্তিস্থান
সাদা মোম/প্যারাফিন
১০ কেজি
৫৫০-৬০০
স্থানীয় কেমিক্যালের দোকান
স্টিয়ারিক এসিড
১ কেজি
৬০-৭০
স্থানীয় কেমিক্যালের দোকান
সুতা
২৫০ গ্রাম
২০-২২
মুদি দোকান
রং
৫০০ গ্রাম
১৫-২০
স্থানীয় কেমিক্যালের দোকান
সয়াবিন তেল
৫০ গ্রাম
৫-৭
মুদি দোকান
প্যাকেট
২৫টি
২৫-৩০
স্টেশনারি দোকান
লেবেল
২৫টি
৫-১০
স্টেশনারি দোকান
আঠা
আনুমানিক
১০-১৫
স্টেশনারি দোকান
                  মোট=৬৯০-৭৭৪টাকা     
                                                           
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা, নভেম্বর ২০০৯।


ছবির :প্যারাফিন বা সাদা মোম
ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।



মোমবাতি তৈরির নিয়ম 
প্রথম ধাপ 
মোম তৈরির ডাইস বা ছাঁচের দুটি অংশ একটি ছিঁটকিনি দিয়ে আটাকানো থাকে। এবং ডাইসের ভিতরে মোমবাতি আকৃতির কতগুলো খাঁজ থাকে। প্রথমে ডাইসের ছিটকিনি খুলে ছাঁচের দুইটি অংশ আলাদা করতে হবে। এরপর একটি কাপড়ে তেল নিয়ে ডাইসের ভিতরে থাকা খাঁজগুলো ভালো ভাবে মুছে নিতে হবে, যাতে করে    মোমগুলো খুব সহজে বের করা যায়।
দ্বিতীয় ধাপ 
ছাঁচের মধ্যে সলতে পরানোর জায়গা রয়েছে। সলতেগুলো উপর থেকে নিচ পর্যন্ত টান টান করে বেঁধে দিতে হবে
ছবি : ডাইসে সুতা লাগানো
ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

তৃতীয় ধাপ 
এরপর ছাঁচের ২টি অংশ এক সাথে আটঁকে দিতে হবে এবং ছাঁচের সাথে লাগানো পানির ট্যাংকে পানি ভরতে হবে। কারণ পানি ভরা থাকলে গরম মোম ঠান্ডা হতে সহজ হয়।
চতুর্থ ধাপ 
এবার চুলায় কড়াই বসাতে হবে। কড়াই গরম হলে তার মধ্যে সাদা শক্ত মোম (প্যারাফিন) দিতে হবে। মোম পুরোপুরি গলে যাবার আগেই কড়াইতে ১০ ভাগ মোমের সাথে ১ ভাগ স্টিয়ারিক এসিড মিশাতে হবে।
পঞ্চম ধাপ 
প্যারাফিন গলে যাবার পর বেশিক্ষণ চুলায় রাখা যাবে না। কারণ গলে যাওয়া প্যারাফিন বাষ্প হয়ে উড়ে যেতে পারে।
ষষ্ঠ ধাপ 
গলা মোম মগে বা চামচে করে আস্তে আস্তে মেশিনের খাঁজগুলোতে ঢালতে হবে।
ছবি: মোম ঢালা
ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা

সপ্তম ধাপ 
মোম ঢালার খাঁজটি যতক্ষণ না পুরোপুরিভাবে ভরবে ততক্ষণ পর্যন্ত মোম ঢালতে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে যে, মোম ঢালার সময় খাঁজের ভেতরে যেন কোন ফাঁকা থেকে না যায়।
অষ্টম ধাপ 
২০/২৫ মিনিট পর মোমগুলো ঠান্ডা হলে ছাঁচের ২টি অংশ আলাদা করে মোমগুলো বের করে আনতে হবে।
নবম ধাপ 
এবার মোমের সলতের বাড়তি অংশগুলো সাইজ মত কাটতে হবে এবং মোমবাতি ভালোভাবে বসানোর জন্য নিচের অংশের তলাটি সমান করে কাটতে হবে। বিভিন্ন আকৃতির নকশা করা মোম তৈরির জন্য সেই অনুযায়ী ছাঁচ তৈরি করতে হয়।
ছবি : মোম সংগ্রহ
ছবি তোলার স্থান: কামরাঙ্গীর চর,   ঢাকা।


  • সাবধানতা
মোমবাতি তৈরি করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে-
  1. স্টিয়ারিক এসিড মোমের সাথে মেশানোর সময় সাবধান থাকতে হবে।
  2. মোমে যদি আগুন ধরে যায় তবে সঙ্গে সঙ্গে চুলা নিভিয়ে ঢাকনা দিয়ে কড়াই ঢেকে দিতে হবে।
  3. চুলার উপর কড়াই থাকা অবস্থায় রং মেশানো যাবে না, চুলা থেকে নামিয়ে রং মেশাতে হবে।
  4. মোম তৈরির কাচামাল থেকে ও তৈরির সময় শিশুদের নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।
  5. কাজ শেষে মোমের ছাঁচটি পরিস্কার করে রাখলে সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

আনুমানিক আয় ও লাভের পরিমাণ  
  • খরচ 
স্থায়ী যন্ত্রপাতির অবচয় (ক্ষতি) বাবদ
৪-৫ টাকা
কাঁচামাল বাবদ
৬৯০-৭৭৪ টাকা
জ্বালানী   
৪৫-৫০ টাকা
                                     মোট=৭৩৯-৮২৯ টাকা 
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা, নভেম্বর ২০০৯।

  • আয় 
উপরের উপকরণ দিয়ে ২৫০টি মোমবাতি তৈরি করা সম্ভব।
১টি মোমবাতি বিক্রিতে আয়=৫-৬ টাকা।
২৫০টি মোমবাতি বিক্রিতে আয়=১২৫০-১৫০০ টাকা।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা, নভেম্বর ২০০৯।

  • লাভ 
২৫০টি মোমবাতি বিক্রিতে আয়
১২৫০-১৫০০ টাকা।
২৫০টি মোমবাতি তৈরিতে খরচ
৭৩৯-৮২৯ টাকা
                                             লাভ=৫১১-৬৭১ টাকা 
অর্থাৎ ৫১১-৬৭১ টাকা লাভ করা সম্ভব। তবে সময় ও স্থানভেদে এর কম বা বেশি লাভ হতে পারে।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা, নভেম্বর ২০০৯।

স্থায়ী উপকরণগুলো একবার কিনলে অনেকদিন ধরে কাজ করা যাবে। ব্যবসার শুরুতেই এ খরচটি করতে পারলে পরবর্তীতে শুধু কাঁচামাল কিনে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব।

সচরাচর জিজ্ঞাসা 
প্রশ্ন ১ : মোমবাতি ব্যবসার বাজার কেমন
উত্তর : গ্রাম বা শহর সব জায়গাতেই মোমবাতির চাহিদা রয়েছে।
প্রশ্ন ২ : মোমবাতি তৈরির ব্যবসা করতে কি পরিমাণ মূলধন লাগে
উত্তর : আনুমানিক ৮০০০ টাকার স্থায়ী উপকরণ এবং ১০০০ টাকার কাঁচামাল কিনে মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
প্রশ্ন ৩ : মোমবাতি তৈরি শিখতে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি না
উত্তর : প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য মোম তৈরীতে অভিজ্ঞ এমন কোন ব্যক্তি, স্থানীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক), যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে পরিচালিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যেতে পারে।




কৃতজ্ঞতা স্বীকার 
ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের, নজরুল ইসলামের নিকট থেকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে মোমবাতি তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এছাড়া মোমবাতি তৈরির ব্যবসা কনটেন্ট লেখার জন্য নিচের বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
  1. ঘোষ, স্বপন কুমার; ১৯৯৩; গ্রামীণ কুটির শিল্প, দে পাবলিশিং; কলকাতা-৭০০০০৭৩।
  2. ইব্রাহীম, মোহাম্মদ; ১৯৯৯; মোমবাতি তৈরী সাবান তৈরি: গ্রামীণ প্রযুক্তি সিরিজ-১, বিজ্ঞান গণশিক্ষা  কেন্দ্র; ঢাকা।
  3. বাবু, মুস্তাগিসুর রহমান ও বাদল, আলম জহিরূল, ২০০১; মোমবাতি; ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন; ঢাকা।


রবিবার, ২৬ মে, ২০১৩

বাসায় হীরা প্রস্তুতি এবং এর রসায়ন

রচনা - কামরুল আলম

বাসায় হীরা প্রস্তুতি এবং এর রসায়ন




হীরা আর কিছুই নয় কার্বনের একটি রূপ মাত্র। গ্রাফাইট আর হীরার মধ্যে মূল পার্থক্য কার্বন কার্বন বন্ধনে। বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে ক্রিত্তিম হীরা প্রস্তুত করা হয়। শিল্পক্ষেত্রে এর ব্যপক ব্যবহার রয়েছে। ডাঃ হল সবপ্রথম ক্রিত্তিম হীরা প্রস্তুত করেছিলেন। তবে ব্যপক চাহিদার কারনে এখন আর হলের প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয় না। বানিজ্যিক ভাবে হীরা প্রস্তুত করার জন্যে হলের প্রক্রিয়া এখন অকার্যকর।
এখন আমরা দেখব কিভাবে বাসায় হীরা প্রস্তুত করা যায়। এ প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত হীরার আকার অত্যন্ত ক্ষুদ্র। বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী।

যা যা লাগবেঃ


১. একটি ভালো মাইক্রোওয়েব ওভেন
২. কফি মগ ( ২ টি)
৩. ৩ মি. মি. গ্রাফাইট পেন্সিল ( ৩ টি)
৪. সামান্য অলিভ অয়েল। ( কয়েক ফোঁটা)
৫. ১০০% সুতির সুতা
এগুলোর মধ্যে ১০০% সুতির সুতা খুজে পাওয়া একটু কষ্টকর হবে।
কাজ-০১ঃ


এই পদ্ধতিতে মাইক্রোওয়েব ব্যবহার করা হয় গ্রাফাইটকে তাপ দিয়ে প্লাজমা অবস্থায় নেয়ার জন্যে। আর অলিভ অয়েল ব্যবহার করা হয় গ্রাফাইট যাতে পুড়ে না যায় [ বেশি তাপে গ্রাফাইট বাতাসের (অক্সিজেন) সাথে বিক্রিয়া করে পুড়ে (আগুন ধরে ) যায়]এছাড়া গ্রাফাইট পেন্সিলে যে বাইন্ডার ( আঠালো পদার্থ ) থাকে তা আলাদা করতে অলিভ অয়েলের ভুমিকা ব্যাপক।
কয়েক ফোঁটা তেল একটি প্লেটে নিতে হবে। তারপর তেলের মধ্যে ভালভাবে সুতা ভিজিয়ে নিতে হবে। সুতা কিছু তেল শোষণ করে নিবে।
কাজ-০২ঃ

এবার সুতা নিয়ে সুতায় একটা গিত্তু দিন। গ্রাফাইটের টুকরো টিকে এবার গিত্তুর ভিতরে দিয়ে দিন। খুব সাবধানে সুতার দুই প্রান্ত টেনে গিত্তু শক্ত করুন। এবার দুইপাশে দুটি টুট পিক ( কাঠি) দিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন।

কাজ-০৩ঃ





মাইক্রোওয়েব এর ভিতরটা ভালো করে পরিস্কার করে নিন।


কাজ-০৪ঃ






খুব ই সাবধানে গিত্তু খুলে নিন। গিত্তু খোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে এটি যাতে এদিক সেদিক নড়ে না যায়। একটি ক্ষুদ্র জায়গায় তেল যাতে সীমাবদ্ধ থাকে।

কাজ-০৫ঃ




এবার কফি মগের পিছন দিকে চিত্রের মত করে গ্রাফাইট বসিয়ে নিন। সমান্তরাল যে দুটি গ্রাফাইট টুকরো রয়েছে তাদের মধ্যে কিন্তু কোন তেল লাগানো হয়নি।






বড় মগটি নিচে এবং ছোট মগটি উপরে রাখবেন। পুরো সিস্টেম  টি ক্রুসিবলের ন্যায় কাজ করবে।

কাজ-৬ঃ


এবার এই বানান ক্রুচিবলতি মাইক্রোওয়েবে রাখুন। জায়গা না হলে মাইক্রোওয়েবের গ্লাস ত্রে টি সরিয়ে রাখতে পারেন।


কাজ-৭ঃ



মাইক্রোওয়েবে সর্বচ্ছ সময় সেট করে দিন। কাজ শেষে মগ ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সব কিছু ঠিক থাকলে এর ভিতরে আপনি ১২০০ ডিগ্রীর বেশি তাপমাত্রা তুলতে পারবেন।
কাজ-৮ঃ




এবার আপনার উৎপাদনটি দেখুন।








রসায়ন কি বলেঃ
এই প্রক্রিয়ায় ডায়মন্ড উৎপাদন কখনই সম্ভব নয়। কেন? কারন
১. আমরা যে পেন্সিল ব্যবহার করি গ্রাফাইট ছাড়া অন্য কাদা জাতিয় দ্রব্য থাকে।
২. কার্বন রি-ক্রিস্তালাইজ করার জন্যে প্রয়োজনীয় তাপ সরবরাহ করার ক্ষমতা মাইক্রোওয়েবের নেই।
৩. তেল ব্যবহার করে এই তাপমাত্রায় পোঁছানো গেলেও প্রয়োজনীয় চাপ পাওয়া যাবে না। ডায়মন্ড তৈরিতে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০০০০ গুন বেশি চাপ দরকার।
৪. কেউ কাউ দাবি করতে পারেন যে সিলিকন কার্বাইড বা জিরকনিয়াম অক্সাইড এর মত তাপ শোষণ কারি পদার্থ ব্যবহার করে এটি করা যেতে পারে, কিন্তু প্রয়োজনীয় চাপ পাবেন কোথায়?
৫. এটি সত্য যে ছোট ক্রিস্তাল তৈরিতে বেশি চাপের দরকার নেই কিন্তু ছোট ক্রিস্তালের কোন বাজার মুল্য নেই।
৬. এটি সত্য যে ডায়মন্ড গ্রাফাইটের চেয়ে অনেক বেশি স্থিতিশীল , তাই গ্রাফাইট সবসময়েই স্থিতিশীল অবস্থায় যেতে চাইবে। মাইক্রোওয়েব এই প্রক্রিয়ার জন্যে ভালো হতে পারে কারন এটি সঠিকভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
৭. খাবার গরম করতে মাইক্রোওয়েবের ব্যবহার এখনও গবেষণাধীন। কারন মাইক্রোওয়েব আমিষ কে মিউট্যান্ট করে ফেলে যা ক্যান্সার এর জন্যে দায়ী।
সতর্কতা ঃ
লেখাটি শুধু আপনাকে আনন্দ দেওয়ার জন্যে, দয়াকরে বাসায় ট্রাই করবেন না।