শনিবার, ২৮ মে, ২০১১

বৈচিত্রপূর্ন ও বিপজ্জনক বৈদ্যুতিক মাছ

রচনা - কামরুল আলম




বৈচিত্র্যময় প্রাণিজগতে বিচিত্র প্রাণির বসবাস সাগর তলের প্রাণিজগতের বৈচিত্র্য আরো বিস্ময়কর সাগরতলের এটি বিস্ময়কর প্রাণির নাম বিদ্যুৎ মাছ ইংরেজিতে ইলেক্ট্রিক ফিশ বলা হয় ইলেক্ট্রিক ফিশ বা বিদ্যুৎ মাছ এমনই একটি মাছ, যেটা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে একটি ইলেক্ট্রিক ফিশ তার বৈদ্যুতিক অঙ্গের শক দ্বারা একটি শক্তিশালী ঘোড়াকে মুহূর্তের মধ্যে কাবু করে ফেলতে পারে যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপাদনে সক্ষম তাকে বলা ইলেক্ট্রোজেনিক মাছ আর যে মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র শুধু সনাক্ত করতে পারে তাকে ইলেকট্রোরিসেপটিভ মাছ বলা হয়



ইলেক্ট্রিক ঈল ফিশ

ইলেক্ট্রিক ঈল ফিশ

কিছু মাছ আছে যারা ইলেক্ট্রোজেনিক এবং ইলেকট্রোরিসেপটিভ উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্য বহন করে হাঙ্গর, বিভিন্ন রে ফিশ এবং ক্যাট ফিশ ইত্যাদি মাছ বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপন্ন করতে অক্ষম এজন্য এদের বিদ্যুৎ মাছের শ্রেণীভুক্ত করা হয়নি লোনা স্বাদু উভয় ধরনের পানিতে বিদ্যুৎ মাছ পাওয়া যায় দক্ষিণ আমেরিকা এবং দক্ষিন আফ্রিকার সাগর নদীর স্বচ্ছ পানিতে মাছ পাওয়া যায় বিভিন্ন জাতের বৈদ্যুতিক মাছের মধ্যে একেক জাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা অনেক ধরনের ইলেক্ট্রিক ইল নামক মাছ শুধু রাতের বেলায় শিকার খুঁজতে বের হয় এর ইলেক্ট্রিক শকের ক্ষমতা এত বেশি যে বড় প্রাণীও ঘায়েল হয়ে যায় দক্ষিণ আমেরিকার নদনদীতে এবং খালবিলে এই বিপজ্জনক মাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বিদ্যুৎ মাছ তার বিশেষভাবে গঠিত যে অঙ্গ থেকে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় ইলেক্ট্রিক অর্গান বা বৈদ্যুতিক অঙ্গ এই অঙ্গ পরিবর্তিত পেশি বা স্নায়ুকোষ দ্বারা বিশেষভাবে গঠিত শুধু বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র তৈরী করার জন্যই এই বৈদ্যুতিক অঙ্গ বৈদ্যুতিক মাছের লেজে অবস্থিত অঙ্গ থেকে উৎপাদিত বৈদ্যুতিক শক্তিকে ইংরেজীতে বলা হয় Electric Organ Discharge. সংক্ষেপে EOD ইলেক্ট্রিক ফিশ দুধরণের- শক্তিশালী দুর্বল শক্তিশালী ফিশ ১০


ইলেক্ট্রিক রে ফিশ
ইলেক্ট্রিক রে ফিশ

থেকে ৫০০ ভোল্ট বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারে যেমন- ইলেক্ট্রিক ইল, ইলেক্ট্রিক রে, ইলেক্ট্রিক ক্যাটফিশ দুর্বল ফিশ কম বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে যেটুকু বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে তা পথ চলা,বস্তু সনাক্তকরণ যোগাযোগ করতে সক্ষম যেমন- Gnathomemus Petersi এবং Apteronotus Albifrons. বিজ্ঞানীরা পর্যন্ত প্রায় তিন রকম মাছের সন্ধান পেয়েছেন, যেগুলো . থেকে ভোল্ট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম এগুলো সাধারনত নিরীহ প্রকৃতির এবং চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে তবে প্রকৃতিগতভাবে ভয়ংকর
 

সুন্দরবন

রচনা - কামরুল আলম

 সুন্দরবন



বাংলাদেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত সুন্দরবন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত এই বনের আকার দশহাজার বর্গকিলোমিটার, যার ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশের ভূখন্ডে। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অবস্থান করে নেয়া এই বনভূমির প্রায় ৩১ শতাংশই নদীনালা আর খালবিল, যার পরিমান ১,৮৭৪ বর্গকিলোমাটার। ১৯৯২ সালে এটি রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।


নামকরণঃ
বাংলায় সুন্দরবন”-এর আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গলবা সুন্দর বনভূমি। সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়ে থাকতে পারে, যা সেখানে প্রচুর জন্মায়। অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যা এরকম হতে পারে যে, এর নামকরণ হয়তো হয়েছে সমুদ্র বনবা চন্দ্র-বান্ধে (বাঁধে)” (প্রাচীন আদিবাসী) থেকে। তবে সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে সুন্দরী গাছ থেকেই সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে।
বনজ সম্পদঃ


উদ্ভিদঃ


প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী (Heritiera fomes) সহ গেওয়া (Excoecaria agallocha), গরান (Ceriops decandra) এবং কেওড়া (Sonneratia apetala) সুন্দরননের প্রধান প্রধান উদ্ভিদ। প্রেইন এর হিসাব মতে (১৯০৩ সালে) এখানে ২৪৫টি শ্রেনী ৩৩৪টি প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের বেশির ভাগ ম্যানগ্রোভে Rhizophoraceae, Avicenneaceae বা Laganculariaceae শ্রেণীর গাছের প্রাধাণ্য থাকলেও বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভে প্রাধাণ্য Sterculiaceae এবং Euphorbiaceae শ্রেণীর গাছের ।


প্রানীঃ


সুন্দরবনের কতৃত্ব করা প্রানী হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ২০০৪ সালের হিসাব মতে এখানে ৫০০ রয়েল বেঙ্গল টাইগার আছে। কচ্ছপ (River terrapin – Betagur baska, Indian flap-shelled turtle – Lissemys punctata এবং Peacock soft-shelled turtle – Trionyx hurum), গিরগিটি Yellow monitor – Varanus flavescens Water monitor – Varanus salvator), অজগর (Python molurus) এবং রয়েল বেঙ্গল টাইগার (Panthera tigris tigris) সুন্দরবনের স্থানীয় প্রজাতিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ (Hog deer – Axis procinus Swamp deer – Cervus duvauceli), মহিষ (Bubalis bubalis), গন্ডার(Javan rhinoceros – Rhiniceros sondaicus Single horned rhinoceros – Rhinoceros unicornis) এবং কুমিরের (Mugger crocodile – Crocodylus palustris) এর মত কিছু কিছু প্রজাতি সুন্দরবনে বিরল হয়ে উঠেছে ২১ শতকের শুরু থেকে। বাণিজ্যিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাজাতির আবাসস্থল। এ থেকে বোঝা যায় যে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বিভিন্ন প্রজাতির একটি বড় অংশ বিদ্যমান (যেমনঃ ৩০ শতাংশ সরীসৃপ, ৩৭ শতাংশ পাখি ও ৩৭ শতাংশ স্তন্যপায়ী)।
(তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া)