রচনা - জাতীয় ই তথ্য কোষ
তরকারির স্বাদ বাড়ানোর জন্য রসুন ব্যবহার করা হয়। তরকারিতে দেয়ার পাশাপাশি রসুনের আচারও তৈরি করা যায়, যা ভাত দিয়ে খেতে খুব সুস্বাদু লাগে। সামান্য পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। সংসারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি যে কোন নারী রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
বাজার সম্ভাবনা
উৎপাদন মৌসুমে রসুনের দাম কম থাকে, তখন রসুন কিনে আচার তৈরি করে বিক্রি করতে পারলে বেশ লাভবান হওয়া যায়। রসুন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া স্বাদের কারণে রসুনকে সবাই বেশ পছন্দ করে। তাই রসুনের আচার তৈরি বেশ সম্ভাবনাময় একটি ব্যবসা হতে পারে।
মূলধন
আনুমানিক ৮০০-১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। বড় আকারে এ ব্যবসা শুরু করতে যদি নিজের কাছে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তবে ঋণদানকারী ব্যাংক(সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক , রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক)বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক, প্রশিকা) থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।
প্রশিক্ষণ
স্থানীয় রান্না শেখানোর প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, নভেম্বর-২০০৯।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, নভেম্বর-২০০৯।
রসুনের আচার তৈরির নিয়ম
১ম ধাপ
পরিস্কার পরিছন্ন রসুন সংগ্রহ করে কোষগুলো আলাদা করে ছাড়িয়ে নিতে হবে এবং পানিতে লবণ মিশিয়ে এ কোষগুলো ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
২য় ধাপ
বাঁশের চালুনীর সাহায্যে রসুনের কোষের খোসাগুলো ভালোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। এরপর নরম ও ঝাঁঝালো গন্ধ দূর করার জন্য রসুনগুলো ফুটন্ত পানিতে ৫ মিনিট ফুটাতে হবে এবং চালুনীতে ঢেলে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
৩য় ধাপ
কভারিং সস তৈরির জন্য সব মসলা পাটায় বেটে নিতে হবে। তারপর ভিনেগারের সাথে মসলাগুলো মিশাতে হবে। ১০ গ্রাম পরিমাণ সরিষা, ১০০ মি.লি গরম তেলে ভেজে নিয়ে ভিনেগার মিশানো মসলাগুলো কড়াইয়ে ঢেলে দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। এবং চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে এর মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ চিনি মিশাতে হবে।
৪র্থ ধাপ
এবার রসুনের কোষগুলো এই মিশ্রণের মধ্যে ঢেলে ১০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে এবং বাকী অর্ধেক চিনি, সাইট্রিক এসিড এবং লবণ মিশিয়ে আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিলে আচার তৈরি হয়ে যাবে। এবার আচার ঠান্ডা করে কাঁচের বৈয়ামে ভরে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, নভেম্বর-২০০৯।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, নভেম্বর-২০০৯।
বছরের যে কোন মৌসুমে রসুনের আচার তৈরি করা যায়। কিছু দিন পর পর আচার তৈরি করে স্থানীয় দোকানে সরবরাহ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন ১ : রসুনের আচারের ব্যবসাতে কি পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন?
উত্তর : আনুমানিক ৮০০-১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
প্রশ্ন ২ : রসুনের আচার তৈরির পর কোথায় বিক্রি করা যায় ?
উত্তর : রসুনের আচার তৈরির পর সেগুলো পাইকারি বা খুচরা দরে বেকারী দোকানগুলোতে বিক্রি করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ৩ : রসুনের আচার তৈরির জন্য কোন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি ?
উত্তর : স্থানীয়ভাবে রান্না শেখানোর যে সকল প্রতিষ্ঠান থাকে সেখান থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার শিরিনা খাতুনের নিকট থেকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এছাড়া রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা কনটেন্ট লেখার জন্য নিচের বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
তরকারির স্বাদ বাড়ানোর জন্য রসুন ব্যবহার করা হয়। তরকারিতে দেয়ার পাশাপাশি রসুনের আচারও তৈরি করা যায়, যা ভাত দিয়ে খেতে খুব সুস্বাদু লাগে। সামান্য পুঁজি দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে চাইলে রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। সংসারের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি যে কোন নারী রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারেন।
|
|
উৎপাদন মৌসুমে রসুনের দাম কম থাকে, তখন রসুন কিনে আচার তৈরি করে বিক্রি করতে পারলে বেশ লাভবান হওয়া যায়। রসুন ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এছাড়া স্বাদের কারণে রসুনকে সবাই বেশ পছন্দ করে। তাই রসুনের আচার তৈরি বেশ সম্ভাবনাময় একটি ব্যবসা হতে পারে।
মূলধন
আনুমানিক ৮০০-১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব। বড় আকারে এ ব্যবসা শুরু করতে যদি নিজের কাছে প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকে তবে ঋণদানকারী ব্যাংক(সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক , রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক)বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান (আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্রাক, প্রশিকা) থেকে শর্ত সাপেক্ষে স্বল্প সুদে ঋণ নেয়া যেতে পারে।
প্রশিক্ষণ
স্থানীয় রান্না শেখানোর প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় উপকরণ, পরিমাণ, মূল্য ও প্রাপ্তিস্থান
- স্থায়ী উপকরণ
উপকরণ | পরিমাণ | আনুমানিক মূল্য (টাকা) | প্রাপ্তিস্থান |
বড় কড়াই | ১টি | ৩৫০-৩৬০ | তৈজসপত্রের দোকান |
বাঁশের চালুনী | ১টি | ৩০-৩৫ | বাঁশের পণ্য বিক্রির দোকান |
কাঁচের বৈয়াম | ৫টি | ১১০-১২০ | তৈজসপত্রের দোকান |
মোট=৪৯০-৫১৫ টাকা |
- কাঁচামাল
উপকরণ | পরিমাণ | আনুমানিক মূল্য (টাকা) | প্রাপ্তিস্থান |
ক) রসুন | ১ কেজি | ১১৫-১২০ | মুদি দোকান |
খ) কভারিং সস | |||
ভিনেগার | ৫০০ গ্রাম | ১৫-১৭ | মুদি দোকান |
লবণ | ৫০ গ্রাম | ২-৩ | মুদি দোকান |
রসুন | ৫০ গ্রাম | ৫-৬ | মুদি দোকান |
হলুদ | ১০ গ্রাম | ২-৩ | মুদি দোকান |
লাল মরিচ | ২০ গ্রাম | ৪-৫ | মুদি দোকান |
জায়ফল | ০৫ গ্রাম | ১-২ | মুদি দোকান |
সরিষা | ১০ গ্রাম | ২-৩ | মুদি দোকান |
চিনি | ৫০ গ্রাম | ৫-৬ | মুদি দোকান |
সরিষার তেল | ১০০ মি.লি. | ৭-৮ | মুদি দোকান |
গ) কভারিং তেল | |||
সরিষার তেল | ৫০ মি.লি. | ৩-৪ | মুদি দোকান |
মোট=১৬১-১৭৭টাকা |
|
|
|
|
||||
|
|
|
ছবি : রসুনের কোষগুলো ছাড়িয়ে নেয়া, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। |
রসুনের আচার তৈরির নিয়ম
১ম ধাপ
পরিস্কার পরিছন্ন রসুন সংগ্রহ করে কোষগুলো আলাদা করে ছাড়িয়ে নিতে হবে এবং পানিতে লবণ মিশিয়ে এ কোষগুলো ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
ছবি: মসলায় রসুনের কোষগুলো ঢালা, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি: জ্বাল দেয়ার সময় চিনি মেশানো, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি:জ্বাল দেয়ার সময় সাইট্টিক এসিড মেশানো ,ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি: তৈরিকৃত রসুনের আচার ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। |
ছবি: রসুন পানিতে ফুটানো, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি: সব মসলার সাথে ভিনেগার মেশানো, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি: গরম তেলে মসলা ঢেলে জ্বাল দেয়া, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। | ছবি: জ্বাল দেয়া মসলায় চিনি মেশানো, ছবি তোলার স্থান : নাখাল পাড়া, তেজগাঁও, ঢাকা। |
২য় ধাপ
বাঁশের চালুনীর সাহায্যে রসুনের কোষের খোসাগুলো ভালোভাবে পরিস্কার করে নিতে হবে। এরপর নরম ও ঝাঁঝালো গন্ধ দূর করার জন্য রসুনগুলো ফুটন্ত পানিতে ৫ মিনিট ফুটাতে হবে এবং চালুনীতে ঢেলে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
৩য় ধাপ
কভারিং সস তৈরির জন্য সব মসলা পাটায় বেটে নিতে হবে। তারপর ভিনেগারের সাথে মসলাগুলো মিশাতে হবে। ১০ গ্রাম পরিমাণ সরিষা, ১০০ মি.লি গরম তেলে ভেজে নিয়ে ভিনেগার মিশানো মসলাগুলো কড়াইয়ে ঢেলে দিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিতে হবে। এবং চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে এর মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ চিনি মিশাতে হবে।
৪র্থ ধাপ
এবার রসুনের কোষগুলো এই মিশ্রণের মধ্যে ঢেলে ১০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে এবং বাকী অর্ধেক চিনি, সাইট্রিক এসিড এবং লবণ মিশিয়ে আরো কিছুক্ষণ জ্বাল দিলে আচার তৈরি হয়ে যাবে। এবার আচার ঠান্ডা করে কাঁচের বৈয়ামে ভরে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
- আয়
১ কেজি আচার বিক্রি হয় | ২০০-২২০ টাকা |
১.৫ কেজি আচার বিক্রি হয় | ৩০০-৩১০ টাকা |
- লাভ
১.৫ কেজি আচারে আয় হয় | ৩০০-৩১০ টাকা |
১.৫ কেজি আচার তৈরিতে খরচ হয় | ১৮৪-২০৬ টাকা |
লাভ =১১৬-১০৪ টাকা অর্থাৎ ১০৪-১১৬ টাকা লাভ করা সম্ভব। তবে সময় ও স্থানভেদে এর কম বা বেশি লাভ হতে পারে। |
বছরের যে কোন মৌসুমে রসুনের আচার তৈরি করা যায়। কিছু দিন পর পর আচার তৈরি করে স্থানীয় দোকানে সরবরাহ করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
সচরাচর জিজ্ঞাসা
প্রশ্ন ১ : রসুনের আচারের ব্যবসাতে কি পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন?
উত্তর : আনুমানিক ৮০০-১০০০ টাকা মূলধন নিয়ে রসুনের আচার তৈরি ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
প্রশ্ন ২ : রসুনের আচার তৈরির পর কোথায় বিক্রি করা যায় ?
উত্তর : রসুনের আচার তৈরির পর সেগুলো পাইকারি বা খুচরা দরে বেকারী দোকানগুলোতে বিক্রি করা যেতে পারে।
প্রশ্ন ৩ : রসুনের আচার তৈরির জন্য কোন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কি ?
উত্তর : স্থানীয়ভাবে রান্না শেখানোর যে সকল প্রতিষ্ঠান থাকে সেখান থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে আচার তৈরির ব্যবসা শুরু করা সম্ভব।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার শিরিনা খাতুনের নিকট থেকে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এছাড়া রসুনের আচার তৈরির ব্যবসা কনটেন্ট লেখার জন্য নিচের বইয়ের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
- আজমী, সাহেদা; হোসেন, এনায়েত, আলী আহমেদ, রসুনের আচার তৈরি, সেপ্টেম্বর ১৯৯৮, এগ্রো প্রসেসিং প্রোগ্রাম, আইটিডিজি-বাংলাদেশ।