রচনা - কামরুল আলম
সর্বোৎকৃষ্ট
খাদ্যের মধ্যে লেবু অন্যতম। লেবুর রয়েছে অনেক উপকারি শক্তি। খুব অল্প লোকের ই
লেবুর প্রতি এলারজি আছে। এদের মধ্যে আপনি নেই তো??? লেবুর প্রতি বিরক্ত থাকলে এর
উপকারিতা গুলো থেকে আপনাকে বঞ্ছিত হতে হবে।
তো জেনে
নেই এর শক্তি গুলো কি কি
১. অনেক
লোক ই দেখেন প্রতিদিন। এদের মধ্যে অনেকের বয়েস বুঝার উপায় থাকে না। মনে হয় বাচ্চা।
কিন্তু আলোচনা করতে করতে বুঝবেন যে তারা বাচ্চা নয়। ধাড়ি বুড়ো, কিন্তু চেহারা দেখে
বুঝা না। আবার অনেক বাচ্চা গুলো দেখা যায় বুড়োর মত। তাই বয়সের ছাপ লুকতে লেবু খান।
লেবু আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
২. স্ট্রোক,
হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে যে, তার নাম লেবু।
৩. এটি
রক্তচাপ ( ব্লাড পেসার) কমায় আর রক্তে এইচ ডি এল ( ভালো কলেস্তরল) বাড়ায়।
৪. লেবু
কোলন, প্রোস্টেট এবং ব্রেস্ত ক্যান্সার প্রতিরোধে ব্যাপক ভুমিকা পালন করে। কোষের
উল্টাপাল্টা পরিপাকে বাধা দেয়, যেটি মূলত ক্যান্সার এর জন্যে দায়ী। এটি কোষের
নাইট্রোসো এমিন প্রস্তুতিতে বাধা দেয়।
৫.
সংক্রমনের বিরুদ্ধে লেবু কার্যকর ভুমিকা পালন করে। এটি রক্তের শ্বেতকনিকা বৃদ্ধি
করে যা জীবাণু ধ্বংস করে। এছাড়া এন্টিবডি উৎপাদনে সহায়তা করে।
৬.
সামান্য গরম পানিতে একটু লেবুর রস, কি যে উপকারি!!! পরিপাক প্রক্রিয়াকে কার্যকর
করে আর লিভারকে রাখে সতেজ। গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় কার্যকর।
৭. লেবুর
খোসা শুকিয়ে গুড়ো করে রাখতে পারেন। আর ব্যবহার করতে পারেন গোসল করার সময়। শরীরকে
করবে ঠাণ্ডা , আর আরাম অনুভব করবেন ব্যাপক। এছাড়া এ গুড়ো মাথাব্যথা দূর করবে।
৮. ব্রণে
লেবুর রস দিলে ব্রণ দূরীভূত হবে আর নতুন ব্রণ উঠতে বাধা প্রধান করবে।
৯. লেবু
হচ্ছে প্রাকৃতিক ত্বক পরিস্কারকারি । এটি ত্বক কালো হওয়ার জন্যে দায়ী মেলানিন কমায়
এবং মেলানিন উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই আপনার ত্বক থাকবে সজীব আর উজ্জ্বল।
১০. সাধারন
ঠাণ্ডা প্রতিরোধে এটি অনেক কার্যকর।
১১. মূত্রনালির
প্রদাহ এবং গনেরিয়া প্রতিরোধে লেবুর শক্তি অনেক।
১২. কিছু
কিছু পোকামাকড়ের কামরের ব্যাথা ও বিষ মুক্ত করতে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়।
১৩. সামুদ্রিক
খাবার ও মাংসে জীবাণু দূর করতে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়।
১৪. যারা
মোটা তারা প্রতিদিন সকালে লেবুর রসের সাথে একটু লবণ মিশিয়ে খেয়েই দেখুন না !!! এটি
আপনার কলেস্তরল লেভেল এবং ওজোন দুটোই কমিয়ে ফেলবে।
১৫.
ডায়রিয়া হলে লেবুর শরবত ডি- হাইদ্রেশান রোধ করে।
১৬. এক
চামচ ঘন লেবুর রস প্রতিদিন খেলে এজমা দূর হয়ে যাবে।
১৭.
ঝরঝরা ভাত খেতে চাচ্ছেন, তো ভাত সিদ্ধ হয়ে আসার সময় একটু লেবুর রস দিয়ে দিন না।
১৮. সাইট্রিক
এসিড বানিজ্যিক ভাবে লেবুর রস থেকেই সংগ্রহ করা হয় যা বিভিন্ন জুস এবং কোমল পানিয়
তে ব্যবহার করা হয়।
১৯. এছাড়া
থালা বাসন ও হাড়ি পাতিল পরিস্কারে এর ব্যবহার ব্যপক জনপ্রিয়।
২০.
টেলার এবং ক্যাশিয়াররা টাকা গুনার সময় দুই আঙ্গুলে লেবুর রস ব্যবহার করে থাকেন।
মূলত এটি জীবাণু দূর করে হাতের কোন ক্ষতি না করেই।
২১.
বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে লেবুর রস ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও এর ক্ষমতা অনেক কম শুধু
ছোট ডিজিটাল ঘড়িতে লেমন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়।
২২. দুর্বল
জৈব এসিড হিসেবে কিছু কিছু কাজে রসায়ন ল্যাবে লেবুর রস ব্যবহার করা হয়।
আসলে
লেবুর ভিতরে কি আছে যে এটি এত কাজ করতে পারে?? চলুন জেনে নেয়া যাক লেবুর ভিতরে কোন
রসায়ন ( ক্যামিকেল) লুকায়িত আছে।
প্রতি
১০০ গ্রাম লেবুতে যা থাকে
শক্তি ১২১ কিলোজুল ( ২৯ কিলক্যালরি)
শর্করা ৯.৩২
গ্রাম
চিনি ২.৫ গ্রাম
আশ ২.৮ গ্রাম
ফ্যাট বা
চর্বি ০.৩ গ্রাম
আমিষ ১.১
গ্রাম
ভিটামিন
বি-১ ( থায়মিন) ০.০৪ মি. গ্রাম ( ৩ %)
ভিটামিন
বি-২ ( রাইবোফ্ল্যাভিন) ০.০২ মি. গ্রাম
( ২ %)
ভিটামিন
বি-৩( নিয়াচিন) ০.১ মি. গ্রাম ( ১ %)
ভিটামিন
বি-৫ ( পেন্থথেনিক এসিড) ০.১৯ মি. গ্রাম ( ৪ %)
ভিটামিন
বি-৬ ০.০৮ মি. গ্রাম ( ৬ %)
ভিটামিন
বি-৯ ১১
মাইক্রো গ্রাম ( ৩ %)
ক্লোরিন ৫.১
মি. গ্রাম ( ১ %)
ভিটামিন
সি ৫৩ মি. গ্রাম ( ৬৪ %)
ক্যালসিয়াম ২৬ মি. গ্রাম ( ৩ %)
আয়রন ০.৬ মি.
গ্রাম ( ৫ %)
ম্যাগনেসিয়াম ৮
মি. গ্রাম ( ২ %)
ম্যাংগানিজ ০.০৩
মি. গ্রাম ( ১ %)
ফসফরাস ১৬
মি. গ্রাম ( ২ %)
পটাশিয়াম ১৩৮
মি. গ্রাম ( ৩ %)
জিঙ্ক ০.০৬ মি.
গ্রাম ( ১ %)
তো
প্রতিবেলায় লেবু খান। লেবুকে ভালবাসুন।